DinajpurBD

কয়লা পাথর চুনামাটির পর দিনাজপুরের খনিজসম্পদে যুক্ত হলো ম্যাগনেটাইট!

Posted September 26th, 2013 by |

উত্তর জনপদের শস্যভাণ্ডারখ্যাত দিনাজপুর বর্তমানে খনিজসম্পদেও সমৃদ্ধ। পেট্রোবাংলা, জিএসবি ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিনাজপুর জেলার কয়েকটি স্থানে ভূগর্ভে পরীক্ষা ও কূপ খনন করে বিভিন্ন মূল্যবান খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছে। এর মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ও মধ্যপাড়া পাথর খনি এরই মধ্যে উত্পাদন শুরু করেছে। ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্প ও দীঘিপাড়া কয়লা প্রকল্প থেকে কয়লা উত্তোলন হলে এ দু’টি খনি দিয়েই দেশের বিদ্যুেতর সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এতে দেশে শিল্প বিপ্লব ঘটবে, অর্থনীতির চাকা সচল হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে। সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই এ সঙ্কট কাটছে না, মন্তব্য ব্যবসায়ী নেতাদের। দিনাজপুরের খনিজসম্পদে নতুন করে যুক্ত হয়েছে লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনি।

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের মশিদপুরে লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনি আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। সেখানে ভূগর্ভের ১৮৮৮ ফুট নিচে প্রায় তিন মিটার পুরু ম্যাগনেটাইটের একাধিক স্তর পাওয়া গেছে।
জিএসবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের ভূগর্ভের খনিতে ম্যাগনেটাইট আবিষ্কার এই প্রথম। তবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পলিবাহিত এবং কক্সবাজারে সমুদ্রতটের বালুতে ম্যাগনেটাইটের উপস্থিতি আরও আগে নিশ্চিত হয়েছে। ম্যাগনেটাইট হচ্ছে চুম্বকজাতীয় একটি খনিজ পদার্থ, যার মধ্যে ‘আয়রন ডাই-অক্সাইড’ থাকে। হাকিমপুরে খনির প্রায় দেড় হাজার ফুট গভীরে চুনাপাথরেরও (লাইম স্টোন) সন্ধান পাওয়া গেছে।

জিএসবি ও হাকিমপুর কূপ খনন প্রকল্পের পরিচালক মো. নেহাল উদ্দীন আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, মশিদপুরের মহেশপুর সেতুর পশ্চিম পাশে কূপ (জিডিএইচ-৬৮) খনন করে ম্যাগনেটাইটের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এই খনি এলাকা কতখানি বিস্তৃত এবং সেখানে কী পরিমাণ ম্যাগনেটাইট মজুত রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি জিএসবি। জানার জন্য তারা অধিকতর অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জিএসবি আরও জানিয়েছে, এই খনিতে হেমাটাইট ও লিমোনাইট নামক খনিজ পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে।
গত ২২ মার্চ খননকাজ শুরু হয়ে এখনও চলছে। কূপ খনন করে যে খনিজ পদার্থ পাওয়া গেছে, তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জিএসবিসহ অন্যান্য গবেষণাগারে কাজ চলছে। জরিপকাজে নিয়োজিত সহকারী পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মো. নুরুজ্জামান সবুজ বলেন, খনিজসম্পদ উন্নয়নে ভূ-বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমের আওতায় জরিপকাজ পরিচালিত হচ্ছে।

ম্যাগনেটাইট আবিষ্কারের খবর পেয়ে জিএসবি’র মহাপরিচালক সিরাজুর রহমান খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জানান, এখানে মূল্যবান লৌহজাতীয় ধাতব পদার্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। এক সময় এখানে সমুদ্র ছিল। এ কারণে এখানে আগ্নেয়শিলাও ছিল। জমাট বাঁধা ওই শিলার ভেতরে খনিজ পদার্থ খোঁজা হচ্ছে। সেখানে ম্যাগনেটাইট পাওয়া গেছে, যা দেশের জন্য লাভজনক হবে। তিনি বলেন, ‘এই চুম্বক জাতীয় খনিজ পদার্থ আবিষ্কার করার পাশাপাশি আমরা সেখানে চুনাপাথরেরও সন্ধান পেয়েছি, যা একটি ব্যতিক্রমি ঘটনা। এই খনন কাজের ব্যয় সরকারের রাজস্ব খাত থেকে নির্বাহ হচ্ছে।

download